স্বীয় উম্মতকে যেমন ফেতনা থেকে
করেছেন তেমনিভাবে কিছু কিছু যুদ্ধ থেকেও সতর্ক করেছেন। এটাতো স্পষ্ট কথা যে উম্মতে
মোহাম্মদীর প্রথম যুদ্ধ মোহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নেতৃত্বে, মক্কার
মোশরেকদের বিরুদ্ধে বদর প্রান্তে সংগঠিত হয়ে ছিল।
আর সর্শেবষ যুদ্ধ হবে ঈসা (আঃ)
নেতৃত্বে, ইহুদীদের বিরোদ্ধে ফিলিস্তিনে। বদর থেকে নিয়ে দাজ্জালের সাথে সংগঠিত যুদ্ধ পর্যন্ত
চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিজয় সম্পর্কে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে অবগত
করিয়েছেন।
যা আমরা এখানে বিস্তারিত বর্ণনা করব।
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লা
বলেছেনঃ
তোমরা আরব উপদ্বীপে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ তোমাদের হাতে তা বিজয় করবেন।
পর তোমরা পারশ্যবাসীদের সাথে যুদ্ধ করবে। আল্লাহ্ ওখানেও তোমাদেরকে বিজয়ী করবেন
এর পর তোমরা রেমবাসীদের সাথে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ ওখানেও তোমাদেরকে বিজয়
করবেন। (মুসলিম)
করবেন। এর পর তোমরা দাজ্জালের বিরোদ্ধে যুদ্ধ করবে আল্লাহ ওখানেও তোমাদেরকে বিজয় করবেন
এ হাদীসে পর্যায় ক্রমে চারটি বিজয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
১- আর উপদ্বীপ বিজয়ঃ
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর জিবীত অবস্থায়
বিভিন্ন যুদ্ধের পর আরব উপদ্বীপ বিজয় হয়েছে, এর মাধ্যমে তাঁর এ বাণী তাঁর জিবীত অবস্থায়ই
বাস্তবায়িত হয়েছে।
উল্লেখ আরব উপদ্বীপের বিজিত এলাকা সমূহ ছিল নিন্মরূপঃ মক্কা, মদীনা,
ভিন্দ্দা, তায়েফ, চুনাইন, রবে ইয়াল্ব, খাইবার, মাদায়েন সালেহ, তাবুক দাওমাতুল
জান্দাল, আইলা, ইয়ামামা, বাহরাইন আহসা) ওমান হাযরামাউত, সানআ, হামীরা, নাজবান,
আরব উপদ্বীপ ইসলাম আগমনের পূর্বে পারশ্য সম্রাজ্যের অংশ ছিল । যদিও আরব উপদ্বীপ
বিভিন্ন যুদ্ধের ফলে বিজয় হয়েছে, কিন্তু হাদীসে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আগাইহি ওয়াসাল্লাম)
সংক্ষিপ্তভাবে শুধু আরব উপদ্বীপের বিজয়ের কথাই উল্লেখ করেছেন।
২- পারশ্য বিজয় :
ওমর ফারুক (রাযিয়াল্লাহু আনহুর যুগে, বিভিন্ন যুদ্ধের পর পারশ্য
বিজয় হয়েছিল, অতএব রাসূল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর এ বাণীটিও সাহাবাগণের
যুগে পূর্ণ হয়ে গিয়েছে।
উল্লেখ্য রাসূল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর আগমনের পূর্বে রূম ও পারশ্য
পৃথিবীর দু'টি বৃহৎ শক্তির অধিকারী রাষ্ট্র ছিল, পারশ্যবাসীদের মাযহাব ছিল অগ্নি পূজা,
তাদেরকে মাজুসী (অগ্নিপূজক) বলা হত।
ইসলামের পূর্বে পারশ্য সম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত এলাকা
সমূহের মধ্যে ছিল, ইয়মান, হিরা, হামদান, কিরমান, রাই, কযবীন, বোখারা, বাসরা,
কিয়ামতের আলামত
কাদেসিয়া, ইসপাহান, খোরাসান (বর্তমানে আফগানিস্থান) তিবরিয, আজারবাইজান, তুরকেমেনি।
স্তান, সমারকাপ, বোখারা, তারসূয়া, এবং মধ্য এশিয়ার অন্যান্য রাষ্ট্রসমূহও পারশ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ছিল।
পরশ্যের বাদশা কিসরা সম্পর্কে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ কিসরা ধ্বংস হলে এর পর আর কোন কিসরা হবে না। (মুসলিম)
এর অর্থ হল এক বার যদি কিসরার রাষ্ট্রে ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে দ্বিতীয়বার অগ্নি পূজকদের আর সেরকম রাষ্ট্র হবে না,। আর না কাউকে কিসরা বলা হবে। মূলত
(সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যা বলেছিলেন তাই হয়েছে।
৩-রূম বিজয়:
হাদীসে তৃতীয় পর্যায়ে রম বিজয়ের কথা বলা হয়েছে, আৱৰ উপদ্বীপ
যেমন বিভিন্ন যুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় হয়েছিল পরশ্য বিজয়ের জন্যও মুসলমানদেরকে কয়েকটি
যুদ্ধ করতে হয়েছিল, এমনিভাবে জয় বিজয়ের পূর্বেও মুসলমানদেবকে খৃষ্টানদের সাথে কয়েকটি
যুদ্ধ করতে হবে।
যার মধ্যে অনেক গুলো হয়ে গেছে। আবার অনেক চলছে, আরো অনেক
ভবিষ্যতে হবে, যার সর্বশেষ বিজয় হবে খুবরুম ইনশাআল্লাহ্ । কোন কোন ওলামাগণের মতে
দ্বিতীয় ও তৃতীয় শতাব্দীতে যখন মুসলমানরা ইউরূপের কোন কোন এলাকা বিজয় করেছিল ঐ
সময় ইটালীও বিজয় হয়েছিল, রূম বিজয়ের উদ্দেশ্য ঐ বিজয়ই।
কিন্তু হাদীসের আগের ও
পরের বর্ণনা অনুযায়ী এটা সঠিক বলে প্রমাণিত হয় না।
হাদীসে একথা স্পষ্ট করে বর্ণনা করা
হয়েছে রুম বিজয়ের পর পরই দাজ্জালের আগমন হবে, এর অর্থ হল হাদীসে যে বিজয়ের কথা
বলা হয়েছে, তা হবে কিয়ামতের পূর্বে দাজ্জালের আগমনের আগে আগে ইনশাল্লাহ্!
উল্লেখ্য বাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর যুগে রূম ও পারশ্যের মত পৃথিবীর
দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তির একটি দেশ ছিল, যারা খৃষ্টান ধর্মের অনুসারী ছিল।
তাই হাদীসে রুম বিজয়ের অর্থ শুধু রূম শহর বিজয় নয়, বরং সমস্ত খৃষ্টান বিশ্ব বিজয় উদ্দেশ্য। রূম শব্দটি শুধু
খৃষ্টানধর্মের আলামত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর যুগে রুম সম্রাজ্য নিম্ন লিখিত এলকা সমূহের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ইউরূপের কিছু কিছু রাষ্ট্র, তুর্কী,
সিরিয়া, মিশর, লেবানন, ওমান, ফিলিস্তিন, জর্ডান, ভাবরুস, সাদুম এবং রোস।
রুম বিজয়ের পূর্ব মুসলমান এবং খৃষ্টানদের মাঝে সংগঠিত যুদ্ধ সমূহের মধ্যে হাদীস
সমূহে আরো একটি যুদ্ধের কথা পাওয়া যায়, যদিও ঐ যুদ্ধের সময় ও স্থান সুনির্দিষ্ট করে বলা
সম্ভব নয়, তবুও অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় যে, ঐ যুদ্ধ কম বিজয়ের কিছু দিন পূর্বে সিরিয়ার পাহাড়ী
সোলল্লাহু আলাইহি তআমারাম) কি পিয়াসি বিপই বইটি হা
আরব উপদ্বীপরশ, এবং রূম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে মরহুম ডঃ হামিদুরা লকিত রাসুল
কিয়ামতের আলামত
এলাকাসমূহে সংগঠিত হবে।
কেননা রূম বিজয়ের সাথে সাথেই দাজ্জালের আগমন হবে এবং
ঈল্য (আঃ) এর নেতৃত্বে তার বিরোদ্ধে যুদ্ধ শুরু হবে। (এব্যাপরে আল্লাহ্ই ভাল জনেন।)
এখানে আমি রুম বিজয়ের পূর্বে দু'টি যুদ্ধের সার সংক্ষেপ বর্ণনা করছি। এর বিস্তারিত
বর্ণনা এ গ্রন্থের 'মালাহেম’ যুদ্ধের বর্ণনা অধ্যায়ে পাওয়া যাবে।
ক - রম পতনের পূর্বে যুদ্ধ।
মুসলমান ও খৃষ্টান হিলে কোন বহিশত্রুর বিরোদ্ধে যুদ্ধ
করবে এবং তাদের সেখানে বিজয় হবে, এর পর মুসলমান ও খৃষ্টানরা পরস্পর গণীমতের মাল
ভাগ করে নিবে। এর পর উভয় দল পাহাড়ী এলাকায় তাবু ফেলবে, ওখানে কোন একজন খৃষ্টান
কমান্ডার উঠে ঘোষণা দিবে যে, "ক্রসেন্ডের বিজয় হয়েছে" তখন একজন আত্মসম্মান বোধ
সম্পন্ন মুসলমান দঁড়িয়ে তাকে ধমক দিবে, ফলে উভয় দলের মাঝে ঝগড়া শুরু হবে, যার ফলে
খৃষ্টানরা সঙ্গ ভঙ্গ করবে, মুসলমানদের কাছ থেকে বদলা নেয়ার জন্য ৮০ টি খৃষ্টান দেশ একত্রিত হবে
, এক রক্ত ক্ষয়ী যুদ্ধের পর মুসলমানদের সমস্ত সৈন্ড শহিদ হয়ে যাবে এবং খৃষ্টানরা বিজয়ী হবে
খ - রূমের পতন ।
রূমের যুদ্ধ কিয়ামতের পূর্বে সর্ববৃহৎ যুদ্ধ হবে, যার পর কিয়ামতের
বড় বড় আলামত সমূহ প্রকাশ পেতে থাকবে,
যুদ্ধের বিস্তারিত বর্ণনা নিন রূপঃ
সিরিয়ান মুসলমান ও খৃষ্টানদের মাঝে এক যুদ্ধ হবে যেখানে মুসলমানদের বিজয় হবে,
তখন তারা খৃষ্টান পুরুষ ও নারীদেরকে নিজেদের গোলাম বানিয়ে নিবে।
খৃষ্টান বাহিনী মুসলমানদের কাছ থেকে বদলা নেয়ার জন্য সিরিয়ার ওপর হামলা করবে।
সিরিয়ার হালবন গরীর আ'মাক বা দাবেক নগরীতে যুদ্ধ হবে, এর পূর্বে মদীনা থেকে মুসলমানদের একটি
সৈনাদল সিরিয়ার মুসলমানদেরকে সাহায্য করার জন্য আমাক বা দাবেকে আসবে,
তখন খৃষ্টান কমান্ডাব মদীনার কমান্ডারকে বলবেঃ
" তোমরা সিরিয়ার সৈন্যদের কাছ থেকে দূরে থাক, তারা
আমাদের নারী পুরুষদেরকে গোলাম বানিয়েছে, তাই আমরা শুধু তাদের সাথেই যুদ্ধ করতে চাই।
মদীনার সৈন্য দলের কমান্ডার বলবে" আল্লাহর কসম আমরা আমাদের মুসলমান ভাইদেরকে কখনো একা একা ছড়ব না" ।
তখন মুসলমান ও খৃষ্টানদের মাঝে তুমুল যুদ্ধ শুরু
হবে এবং মুসলমানদের এক তৃতীয় অংশ সৈন্য নিহত হবে, যারা আল্লাহর নিকট শাহাদাতের
উত্তম মর্যাদা লাভ করবে, সৈনাদের একদল যুদ্ধের ময়দান থেকে পালিয়ে যাবে, তাদের তাওবা
ভাল্লাহ্ কবুল করবে না।
বাকী এক অংশের হাতে বিজয় অর্জিত হবে যাদেরকে আল্লাহ্ সর্বপ্রকার ফেতনা থেকে রক্ষা করবেন, সিরিয়ায় খৃষ্টানদের পরাজয়ের পর মুসলমানরা খৃষ্টানদের প্রাণকেন্দ্র রূমে আক্রমণ করবে, স্থল ও নদী পথে তুমুল যুদ্ধ হবে।
স্থল পথে কুনতুনিয়া ( ইস্তাম্বুলের পুরানো নাম) যুদ্ধ হবে,) যাবে,
আর মুসলমানরা তা দ্বিতীয়বার বিষয় করবে।
উল্লেখ্য ভুবন্ধী আতা মুসলমানদের দখলে আছে কিন্তু ভবিষ্যতে কোন এক সময় তা খৃষ্টানদের দখে
এ যুদ্ধে সত্তর হাজার মুসলমান অংশগ্রহণ করবে, ইস্তামবুলে ইসলাম ও খৃষ্টানদের মাঝে
এ হবে সর্বশেষ যুদ্ধ, যেখানে আল্লাহর সাহায্যের অভূতপূর্ব নমুনা দেখা যাবে, সেখানে অস্ত্র
ব্যবহারের সুযোগ হবে না। মুসলমানরা প্রথমে নারে তাকবীর, লাইলাহা ইল্লাল্লাহ্ আল্লাহ্
আকবার বলবে, এতে শহর রক্ষাকারী একটি দেয়াল পড়ে যাবে, দ্বিতীয় বার নাৱে তাকবীর
বলাতে অপর দেয়ালটিও পড়ে যাবে।
তৃতীয় বার নারে তাকবীর দেয়াতে শহর বিজয় হয়ে
যাবে। অপর প্রান্তে রূমে এত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হবে যে, ইতি পূর্বে এত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ আর কখনো
হয়নি।
একাধারে চার দিন পর্যন্ত যুদ্ধ হবে, প্রথম তিন দিন মুসলমানদের পরাজয় হবে, প্রতি দিন
যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সমস্ত সৈন্য নিহত হয়ে যাবে। চতুর্থ দিন আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহে
মুজাহিদরা বিজয় লাভ করবে।
এ যুদ্ধে ৯৯ পারসেন্ট লোক মারা যাবে,
যুদ্ধের ময়দান বহুদূর পর্যন্ত লাশের স্তুপে পরিণত হবে। এমনকি কোন একটি প্রাণীও যদি লাশের ওপর দিয়ে অতিক্রম
করতে চায়, তাহলে তা মারা যাবে, কিন্তু লাশ অতিক্রম করা শেষ হবে না। রূম বিজয়ের পর
মুসলমানরা গনীমতের মাল বন্টন করতে থাকবে এমতাবস্থায় তারা দাজ্জালের আগমন বার্তা লাভ
করবে।
তখন তারা সব কিছু রেখে সিরিয়ার দিকে বের হবে, আর তা হবে দাজ্জাল বিরোধী
যুদ্ধের স্থান। দাজ্জালের আগমনের পূর্বে ইমাম মাহদীর খেলাফত প্রতিষ্ঠিত হবে, অতএব রমের
পত তার নেতৃত্বেই শুরু হবে ।(এব্যাপারে আল্লাহই ভাল জানেন)
৪ - দাজ্জাল হাত্যা ঃ
রুম বিজয়ের পর পরই ইহুদীদের নেতা দাজ্জালের আগমন ঘটবে,
পৃথিবীর সমস্ত ইহুদী, কাফের এবং মোনাফেক তার সাথে মিলে যাবে, শুধু ইরানের ইসপাহান
থেকে সত্তর হাজার ইহুদী তার দলে যোগ দিবে দাজ্জাল মক্কা ও মদীনায় প্রবেশ করতে পারবে
না। মক্কা ও মদীনার সংরক্ষণের জন্য আল্লাহ্ ফেরেশ্তাদেরকে পাহাড়াদার নিযুক্ত করবেন।
মক্কা ও মদীনা ব্যতীত সারা পৃথিবীতে দাজ্জাল ঘুরবে। যখন সিরিয়ার রাজধানী দামেশকে
পৌঁছবে তখন 'গোড়া নামক স্থানে মুসলমানদের সাথে তার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হবে। দাজ্জাল
দামেশকে থাকা অবস্থায়ই ঈসা (আঃ) আকাশ থেকে অবতরণ করবেন। এর পর তিনি
দাজ্জালকে ধাওয়া করবেন এবং 'লুদ' নামক স্থানে তাকে স্বীয় তীর দিয়ে হত্যা করবেন। এ হল
ঐ চারটি বিজয়ের ঘটনা যা মোহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নবুয়ত প্রাপ্তির পর
থেকে নিয়ে ঈসা (আঃ) এর পুনরাগমন পর্যন্ত হবে।
এর মধ্যে দুটি বিজয়ের ঘটনা সাহাবা ও
তাবেঈনদের যুগের সাথে সম্পৃক্ত, আর দু'টি কিয়ামতের খুব কাছা কাছি সময়ের সাথে সম্পৃক্ত।
হাদীসে উল্লেখিত বিজয়সমূহ ব্যতীত যুদ্ধ সম্পর্কে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বর্ণনাও এসেছে যা
এখানে উল্লেখ করা উপযুক্ত বলে মনে হচ্ছে, আর তাহলঃ
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম)
বলেছেনঃ“ বাইতুল মাকদেস আবাদ হবে, আর এর পর মদীনা অনাবাদী হয়ে যাবে,
মদীনা অনাবাদী হওয়ার পর বড় বড় যুদ্ধ সমূহ শুরু হবে, যার ফলে কুতুনতুনিয়া বিজয় হবে।
কুস্তুনতুনিয়া বিজয়ের পর দাজ্জাল আসবে”। (আবুদাউদ)
হাদীসের শেষ অংশে যে দুটি যুদ্ধের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তার বর্ণনা পূর্বে অতিক্রম
হয়েছে অর্থাৎ ঃ রূমের পতন ও দাজ্জাল হত্যা । অবশ্য পূর্বের দু'টি বর্ণনা নুতন, অবস্থা দৃষ্টে
মনে হয় যে, চারটি ঘটনাই কিয়ামতের খুব নিকটবর্তী সময়ে সংঘটিত হবে।
বাইতুল মাকদেস
মুসলমানদের দখলে চলে আসবে, আর সম্ভবত তাকে ইসলামী হুকুমতের রাজধানী করা হবে,
এতে তার সম্মান বৃদ্ধি পাবে। এতুলনায় মাদীনার জাকজমক কমে যাবে, বাইতুল মাকদেস
মুসলমানদের অধিনস্ত হওয়ার পর কিয়ামতের নিকটবর্তী যুদ্ধসমূহ শুরু হয়ে যাবে। যার সর্বশেষ
ফলাফল হবে রূমের পতন ও দাজ্জাল হত্যা।
দাজ্জাল নিহত হওয়ার পর ইয়াজুজ মাজুজের হত্যা
ও রক্তপাতের ফেতনা শুরু হবে, কিন্তু মুসলমানরা এ ফিতনার মোকাবেলা করতে পারবে না ।
ঈসা (আঃ) আল্লাহর নির্দেশে মুসলমানদেরকে ভূর পাহাড়ে নিয়ে যাবেন, আর যারা বাকী থাকবে
তারা এদিক সেদিক কেল্লা সমূহে আশ্রয় নিয়ে নিজেদেরকে সংরক্ষণ করবে।
দাজ্জাল নিহত
হওয়ার পরই জিহাদ ফরজ হওয়ার বিধান রহিত হয়ে যাবে। (এব্যাপারে আল্লাহই ভাল
জানেন।)
0 মন্তব্যসমূহ